প্রতিষ্ঠাতা পরিচিতি

প্রতিষ্ঠাতা পরিচিতি

আল্লামা নূরুল ইসলাম ওলীপুরী (দা. বা.) এর সংক্ষিপ্ত জীবনী

আল্লামা নূরুল ইসলাম ওলীপুরী একজন খ্যাতিমান বাংলাদেশী ইসলামি ব্যক্তিত্ব। তিনি একাধারে শিক্ষাবিদ, বিতার্কিক, ওয়ায়েজ, মুফাসসির, মুবাল্লিগ, লেখক, ও আলোচক। তিনি বাংলাদেশে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের একজন মুখপাত্র। কুরআন-হাদিসের নিগূঢ় তত্ত¡ ও ব্যাখ্যা অত্যন্ত সহজ-সরল ও সাবলীলভাবে এবং আলেম-গায়রে আলেম সকলের বোধগম্য করে উপস্থাপনে এক বিস্ময় প্রতিভা হিসেবে পরিচিত।  বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ফিরাকে বাতেলার সাথে মুনাজারা বা বিতর্কে অংশ নিয়ে আহলে সুন্নত ওয়াল জামাআত এবং মাসলাকে দেওবন্দের আদর্শ ও কর্মধারাকে দেশ ও জাতির সামনে সমুন্নত করায়  তিনি ‘মুনাজেরে জমান’ হিসেবেও খ্যাতি লাভ করেন।

জন্ম ও বংশ

আল্লামা নূরুল ইসলাম ওলীপুরী পঞ্চাশের দশকের গোড়ার দিকে বাংলাদেশের বৃহত্তর সিলেট বিভাগের অন্তর্গত হবিগঞ্জ জেলার ওলীপুর গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মাওলানা আব্দুর রহীম। আল্লামা ওলীপুরী পাঁচ সহোদর ও দুই সহোদরার মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ। তাঁর মাতার নাম “শুয়ায়ে চান্দ” ওরফে উম্মে গুলশান । “শুয়ায়ে চান্দ” এটি ফার্সি শব্দ। এর  বাংলা অনুবাদ হচ্ছে চাঁদের কিরণ বা জ্যোৎস্না ।

শিক্ষাজীবন

বড়বোন গুলেনূরের নিকট তাঁর লেখা-পড়ার হাতেখড়ি। তাঁর নিকট থেকেই আরবি ও বাংলা বর্ণমালার পরিচিতি লাভ করেন। আল্লামা ওলীপুরীর বয়স যখন পাঁচ বছর, তখন তাঁর পিতা-মাতা দুজনই বসন্ত রোগে আক্রান্ত হয়ে ইন্তেকাল করেন। ঠিক একই সময়ে একই রোগে তাঁর বড়ভাই মৌলভী আব্দুস সামাদ ও বড়বোন গুলেনূর ইন্তেকাল করেন। তখন ওলীপুরী নিজেও বসন্ত রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। কুদরতের ফয়সালা ছিল, তাঁর মাধ্যমে দ্বীন ও ইলমে দ্বীনের খেদমত হবে, দেশ ও জাতির সেবা হবে। ফলে আসমানি ইশারায় তিনি সুস্থ হয়ে উঠলেন। শিক্ষা জীবনের শুরুতেই আল্লামা ওলীপুরী পিতা-মাতা, বড়ভাই ও বড়বোনকে হারিয়ে একেবারে এতিম হয়ে পড়েন। শিকার হন অবর্ণনীয় দুঃখ-কষ্ট ও অসহায়ত্বের। জীবনের শুরুতেই এমন দুঃসহ ও দুর্বিষহ অবস্থার সম্মুখীন হওয়া একজন বালকের জন্য সামনের পথ পাড়ি দেওয়া এবং সব বাধা-বিপত্তি মাড়িয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়া কতটা কঠিন সেটা খুব সহজেই অনুমান করা যায়। চ্যালেঞ্জ ও জীবনের বাস্তবতা বুঝার আগেই কঠিন চ্যালেঞ্জ ও বাস্তবতার মুখোমুখি হন। ১৯৫৬ ও ১৯৫৭ সালে শরীফাবাদ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুই বছর লেখা-পড়া করার পর অভিভাবক ও পৃষ্টপোষকের অভাবে লেখা-পড়া বন্ধ হয়ে যায়। এভাবেই চলে যায় তিন বছর। ১৯৬০ সালে তাঁর এক ভগ্নিপতি তাঁকে হবিগঞ্জের বানিয়াচং আলিয়া মাদরাসার হিফজখানায় ভর্তি করে দেন। পিতা-মাতাহারা এতিম ওলীপুরী অর্থের অভাবে হিফজখানার পড়াও শেষ করতে পারেনি। আবারও পড়া-লেখা বন্ধ হয়ে যায়। তারপর ১৯৬৩ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের বিখ্যাত দ্বীনী মারকাজ জামিয়া ইমদাদিয়া কিশোরগঞ্জে তৃতীয় শ্রেণীতে ভর্তি হন। পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত তিন বছরে প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। তারপর ১৯৬৬ সালে জামিয়া সা‘দিয়া রায়ধরে ভর্তি হন। দীর্ঘ ৮ বছর লেখা-পড়া করে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন।  ১৯৭৩ সালে ঢাকার জামিয়া কুরআনিয়া আরাবিয়া লালবাগে ভর্তি হন। প্রথম বছর মিশকাত (ফযিলত) ও দ্বিতীয় বছর (১৯৭৫ সালে) দাওরায়ে হাদিস (মাস্টার্স) পাস করেন। এবছরই রমযান মাসে শায়খুত তাফসির আল্লামা আহমদ আলি লাহোরী রহ. এর শাগরেদ আল্লামা শামসুদ্দিন কাসেমী রহ. এর তত্ত্বাবধানে জামিয়া হুসাইনিয়া ইসলামিয়া আরযাবাদ, ঢাকা থেকে তাফসিরুল কুরআনের উপর বিশেষ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।

কর্মজীবন

আল্লামা ওলীপুরী শিক্ষকতার মাধ্যমে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা শেষে, তিনি  কয়েক বছর হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার শাহপুর হুসাইনিয়া মাদরাসায় শিক্ষকতা করেন। মাদরাসাটি তখন মিশকাত তথা ফযিলত মারহালা পর্যন্ত ছিল। দুই বছর তিনি সেখানে হাদিস এবং তাফসিরের কিতাবের পাশাপাশি আরো বিভিন্ন বিষয়ের উচ্চতর কিতাবসমূহের পাঠদান দান করেন। সেখান থেকে চলে যান জামিয়া সা‘দিয়া রায়ধর মাদরাসায়। এখানে তিনি ছয় বছর শিক্ষকতা করেন। এরপর সতের বছর হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলায় অবস্থিত দারুস সুন্নাহ মাদরাসা মনতলার প্রধান পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। আল্লামা ওলীপুরী ২০০০ সালের জানুয়ারি মাসে শায়েস্তাগঞ্জ পুরানবাজারে “মাদরাসায়ে নূরে মদীনা” প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে এ মাদরাসায় প্রধান পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন। ২০১২ সালে তাঁর প্রচেষ্টায় “কওমী মাদরাসা বোর্ড হবিগঞ্জ” প্রতিষ্ঠিত হলে তিনি এই বোর্ডের সভাপতি মনোনীত হন। অদ্যাবধি তিনি অত্যন্ত দক্ষতা ও সুনামের সাথে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। এছাড়া ২০২০ সাল থেকে সামাজিক ও অরাজনৈতিক সংগঠন ইসলামী সংগ্রাম পরিষদ হবিগঞ্জ-এর সভাপতির দায়িত্ব পালন করে চলেছেন। আল্লামা ওলীপুরী হাফিজাহুল্লাহ দেশে এবং বিদেশে একজন জনপ্রিয় মুফাস্সির হিসেবে পরিচিত । তিনি সর্বস্তরের মানুষের কাছে ইসলামী জীবনাদর্শের বাণী পৌঁছে দেয়ার উদ্দেশ্যে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, মধ্যপ্রাচ্য এবং দক্ষিণ এশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেন।

আধ্যাত্মিকতার দীক্ষা

আল্লামা ওলীপুরী হাফিজাহুল্লাহ শরিয়তের বাহ্যিক শিক্ষা-দীক্ষার পাশাপাশি আধ্যাত্মিকতার চর্চায়ও আত্মনিয়োগ করেন। ফেদায়ে মিল্লাত আল্লামা আসআদ মাদানী রহ. তাঁর আধ্যাত্মিক জ্ঞানের উস্তাদ ছিলেন। একবার তিনি ফেদায়ে মিল্লাতের সাথে সাক্ষাতের জন্য দেওবন্দ গমন করেন। মনে রাখতে হবে, সুলুক ও তাযকিয়ার নিসবত প্রথাগত কোন নিসবত নয়। কেবল কোন বুযুর্গের হাতে নামসর্বস্ব বাইআত গ্রহণ করে সুলুকের পথে অগ্রসর হওয়া যায়না। শায়খ ও মুর্শিদের হাতে বাইআত গ্রহণ করে কোন ধরণের যোগাযোগ রক্ষা ব্যতীত এবং নিয়মিত তাঁর দীক্ষামত মেহনত ও রিয়াজত ব্যতীত তাযকিয়ায়ে নফস ও ইসলাহে বাতেন সম্ভব হয়না। আল্লামা ওলীপুরী হাফিজাহুল্লাহ প্রথাগত কোন মুরিদ ও বাইআত গ্রহণকারী ছিলেন না। তিনি প্রকৃতার্থে ফেদায়ে মিল্লাতের সোহবতে, তাঁর রাহনুমায়িতে সুলুকের পথে উৎকর্ষসাধনের দৃঢ় সংকল্প লালন করেছিলেন। ফেদায়ে মিল্লাত তাঁর এই গভীর আগ্রহ ও দৃঢ় সংকল্প বূঝতে পেরেছিলেন। কিন্তু দুই ভিন্ন দেশের নাগরিক হওয়ায় শায়খ ও মুরিদের মধ্যবর্তী বিশাল যে ভৌগলিক দূরত্ব তা এক্ষেত্রে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা ও সার্বিক তত্ত্বাবধানে বড় বাধা হওয়ায় ফেদায়ে মিল্লাত রহ. বাংলাদেশে মাদানী রহ. এর অন্যতম খলিফা শায়খ আব্দুল হক গাজীনগরী মাদফুনে মক্কী রহ. এর হাতে বাইআত হওয়ার এবং তাঁর কাছেই সুলুক ও তাযকিয়ার মেহনত জারি রাখার নির্দেশনা দেন। ফেদায়ে মিল্লাতের নির্দেশনা মাফিক আল্লামা ওলীপুরী শায়খ গাজীনগরী রহ. এর হাতে বাইআত হন। শায়খ গাজীনগরী রহ. যতদিন জীবিত ছিলেন, তাঁর সাথে ইসলাহ ও তাযকিয়ার সম্পর্ক কায়েশ রাখেন। শায়খে গাজীনগরী মাদফুনে মক্কী রহ. এর ইনতেকালের পর আল জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী (হাটহাজারী মাদরাসা) এর মহা-পরিচালক শায়খুল ইসলাম আল্লামা আহমদ শফি রহ. এর হাতে বাইআত হন। শায়খুল ইসলাম তাঁকে বাইআতের ইযাজতও প্রদান করেন। এছাড়া আরো অনেক বুযুর্গ আল্লামা ওলীপুরী হাফিজাহুল্লাহকে বাইআতের ইযাজত প্রদান করেছেন।

বাহাস/বিতর্ক

ওয়ালিউল্লাহী ও ইসমাঈলী চেতনায় উজ্জীবিত আল্লামা ওলীপুরী হাফিজাহুল্লাহ সমাজে প্রচলিত রুসম-রেওয়াজ ও শিরক- বেদআতের মূলোৎপাটনকে জীবনের অন্যতম ব্রত হিসাবে গ্রহণ করেন। ফলে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের মুখপাত্র হিসেবে যেমন দেশ-বিদেশে বরিত হন, তেমনি ফিরাকে বাতেলার পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন নোংরা অপপ্রচার ও আক্রমণেরও শিকার হন। বাতিলপন্থী ও বেতাদীদের আস্ফালন রোধে এবং তাদের উত্থাপিত বিভিন্ন সংশয়  অপনোদনে জীবনে বেশ কয়েকবার তাদের সাথে বাহাস-বিতর্কে  অংশগ্রহণ করেছেন। প্রতিটি মুনাযারায় তিনি হক ও হক্কানিয়াতের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এসব বাহাস-বিতর্কে তিনি কুরআন-হাদিস, ইজমা, কিয়াস এবং সাহাবায়ে কেরাম ও মুজতাহিদ ইমামগণের  বয়ানের মাধ্যমে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত ও দেওবন্দি মাসলাকের  আকিদা ও আমলকে জোরালোভাবে প্রমাণিত করতে সক্ষম হয়েছেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য কয়েকটি বাহাস হচ্ছে,

১৯৮৪ সালে নরসিংদী ঘাগুটিয়া স্কুল মাঠের বাহাস।

১৯৯৩ সালে কিশোরগঞ্জ বাজিতপুরের বাহাস।

১৯৯৭ সালে নেত্রকোনার বাহাস।

১৯৯৮ সালে নরসিংদীর রায়পুরার বাহাস।

লেখার জগতে আল্লামা ওলীপুরী

আল্লামা ওলীপুরী হাফিজাহুল্লাহ বয়ানের মত লেখার জগতেও একজন ক্ষুরধার লেখক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছেন। ছাত্রকাল থেকেই তিনি বাংলা সাহিত্যের প্রবাদ-পুরুষ আল্লামা মুহিউদ্দিন খান রহ. এর পরামর্শে লেখালেখির সাথে যুক্ত হন এবং হযরতের কাছেই বাংলা সাহিত্যের প্রশিক্ষণ নেন। ওলীপুরী হাফিজাহুল্লাহ কর্মজীবনের শুরু থেকেই খান সাহেবের সম্পাদিত মাসিক মদীনায় নিয়মিত প্রবন্ধ-নিবন্ধ লেখতেন। মাসিক মদীনায় তাঁর লিখিত প্রবন্ধসমূহ একত্রে নূরে মদীনা নামে গ্রন্থাকারেও প্রকাশিত হয়েছে। আহলে হাদিস, কাদিয়ানী ও রেজাখানীসহ বিভিন্ন ফেরকার খণ্ডনে তিনি অনেক গ্রন্থ রচনা করেছেন। তাছাড়া বিভিন্ন সময়ে তাঁর প্রদত্ত বক্তৃতাগুলো “মাওয়ায়েজে ওলীপুরী” “নির্বাচিত বয়ান সমগ্র” ইত্যাদি নামে বই আকারে প্রকাশিত হয়েছে। তাঁর লিখিত আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত পরিচিতি গ্রন্থটি ইংরেজি ভাষায় অনুবাদের কাজও চলমান।  লেখক হিসেবে আল্লামা ওলীপুরী হাফিজাহুল্লাহ কতটা সফল ও স্বার্থক এর একটি অনুমান করা যায়, মাসিক মদীনা সম্পাদক আল্লামা মুহিউদ্দিন খান রহ. এর একটি অভিমতের মাধ্যমে। খান সাহেব রহ. লিখেন, “মাওলানা ওলীপুরী সাহেব দেশের প্রচলিত নানা কুসংস্কার, শিরক, বেদাত এবং ধর্মের নামে আচরিত বিভিন্ন ধরণের অনাচারের বিরুদ্ধে ওয়াজের মাধ্যমে যেমন বিরামহীন সংগ্রাম করে যাচ্ছেন, তেমনি লেখনীর মাধ্যমেও তাঁর সংগ্রাম অব্যাহত আছে। ওলীপুরী সাহেবের লেখাগুলো বাতিলের প্রাসাদে বেশ নাড়া দিয়েছে। এসব লেখার তীব্র সমালোচনা করে প্রকাশিত কিছু লেখাই তার প্রমাণ। এটাও তাঁর লেখার ওজন পরিমাপের একটি মাপকাঠিরূপে বিবেচিত হতে পারে। এসব প্রতিক্রিয়া যে অজ্ঞদের বিরক্তিকর চিৎকার ছাড়া আর কিছুই নয়, তা বলা বাহুল্য। অন্যকথায় সেগুলোকে সারবত্তাহীন প্রলাপ বলা চলে। মোটকথা, মাওলানা নুরুল ইসলাম ওলীপুরী যেমন অনলবর্ষী বক্তা, তেমনি ক্ষুরধার কলমেরও অধিকারী।”

আল্লামা নুরুল ইসলাম ওলীপুরীর সংকলিত বয়ান ও লিখিত গ্রন্থসংখ্যা শতাধিক। এরমধ্যে আছে,

  • ইসলাম ও আধুনিক বিজ্ঞান
  • নারীর মর্যাদা ও অধিকার
  • নূরে মাদীনা (প্রবন্ধ সংকলন)
  • মাযহাব সিরিজ
  • প্রকৃত আহলে সুন্নত ওয়াল জামা‘তের পরিচিতি
  • কাদিয়ানী মতবাদ ও ইসলাম
  • সহজ সরল পথ
  • ওয়ায কী ও কেন?
  • নারী মর্যাদা ও অধিকার
  • উলামায়ে কেরামের দায়িত্ব
  • বিশ্ব মুসলিম নিরাপত্তা ব্যবস্থা
  • অর্থনীতি ও স্বার্থনীতি
  • মুখোশ উন্মোচন
  • ইভটিজিং সমস্যা ও সমাধান

পারিবারিক জীবন

তিনি এক ছেলে ও চার মেয়ের জনক। তাঁর ছেলে মাওলানা কামরুল ইসলাম ইবনুল ওলীপুরী হাটহাজারী মাদরাসা থেকে দাওরায়ে হাদিস পাশ করেন। আল্লামা ওলীপুরীর চার মেয়ের জামাইয়ের সবাই আলেমে দ্বীন। সবাই বিভিন্ন দ্বীনী খেদমতে সম্পৃক্ত। বড় মেয়ের জামাই মাওলানা রফিকুল ইসলাম হরষপুরী মাদরাসায়ে নূরে মদীনার সিনিয়র শিক্ষক। পাশাপাশি দাওয়াতি ময়দানেও কাজ করছেন। মেঝ মেয়ের জামাতা মাওলানা আব্দুল হক সাহেব জামিয়া ইউনুছিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাবেক শিক্ষক ছিলেন। বর্তমানে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরস্থ কলেজপাড়া জামিয়া মাদানিয়ার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক। তৃতীয় মেয়ের জামাতা মাওলানা মুজাহিদুল ইসলাম ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় “দারুল বারাকাহ আল ইসলামিয়া” মাদরাসার পরিচালক হিসাবে দায়িত্বপালন করছেন। ছোটমেয়ের জামাতা মাওলানা শাইখুল ইসলাম তাঁর ভাতিজা। আপন বড়ভাই মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম রহ. এর ছোট ছেলে। তিনি ঢাকা শহরে একটি মাদরাসায় মুহাদ্দিস হিসাবে খেদমত করে যাচ্ছেন।

মোটকথা, আল্লামা ওলীপুরী হাফিজাহুল্লাহ সত্যের পথে একজন নির্ভীক ও অকুতোভয় সৈনিক। তার জীবন একটি বিরামহীন ও বর্ণাড্য কর্মময় জীবন। হকের পক্ষে আন্দোলন ও সংগ্রামমূখর জীবন। সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে দৃঢ়তা ও অবিচলতার জীবন।  কুরআন-সুন্নাহর বাণী ও আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আদর্শ প্রচারে এবং সকল প্রকার বাতিল ও বিদআত প্রতিরোধে তিনি লড়ে যাচ্ছেন। 

আল্লাহ তাআলা হযরতের বরকতময় ছায়াকে আমাদের উপর দীর্ঘায়িত করুন। ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর জন্য তাঁকে এবং তাঁর পরিবারকে ব্যাপক ও বিরামহীন খেদমত করে যাওয়ার তাওফিক দান করুন।

arrow_upward